অভিনেত্রী নুসরাত ফারিয়া গ্রেপ্তার: আদালতে হাজিরা, কারাগারে পাঠানোর আবেদন:
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা | ১৯ মে ২০২৫
চলচ্চিত্র অঙ্গনের পরিচিত মুখ ও জনপ্রিয় অভিনেত্রী নুসরাত ফারিয়াকে রাজধানীর হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। তিনি থাইল্যান্ড যাওয়ার উদ্দেশ্যে বিমানবন্দরে অবস্থান করছিলেন।
গ্রেপ্তারের পর সোমবার (১৯ মে) সকালে তাকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন জানায় পুলিশ।
মামলার পটভূমি:
নুসরাত ফারিয়ার বিরুদ্ধে যে মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি ছিল, সেটি ২০২৪ সালের জুলাই মাসে সংঘটিত গণ-অভ্যুত্থানের সময়কার একটি হত্যাচেষ্টা মামলা। ওই সময় সারাদেশে সরকারবিরোধী আন্দোলনের অংশ হিসেবে সংঘাতপূর্ণ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় এবং রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় সহিংসতা দেখা দেয়।
ভাটারা থানায় দায়ের করা এক মামলায় অভিযোগ করা হয়, অভিযুক্তরা পরিকল্পিতভাবে এক রাজনৈতিক নেতার ওপর হামলা চালিয়ে তাকে হত্যাচেষ্টা করে। মামলার এজাহারে নুসরাত ফারিয়ার নাম সহযোগী পরিকল্পনাকারী ও উসকানিদাতা হিসেবে উল্লেখ করা হয়।
গ্রেপ্তার প্রক্রিয়া ও ডিবি হেফাজত:
১৮ মে (শনিবার) রাতে ইমিগ্রেশন কর্মকর্তারা তার নামে গ্রেপ্তারি পরোয়ানার তথ্য শনাক্ত করেন এবং সঙ্গে সঙ্গে তাকে আটক করা হয়। পরে তাকে ভাটারা থানায় নিয়ে যাওয়া হয় এবং প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কার্যালয়ে হস্তান্তর করা হয়।
ডিবি সূত্র জানিয়েছে, তদন্তের স্বার্থে তাকে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে। মামলার অন্যান্য আসামিদের সাথেও তার যোগাযোগের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
আদালতে হাজিরা ও আইনি প্রক্রিয়া:
সোমবার সকালে পুলিশের এক প্রতিনিধি দল নুসরাত ফারিয়াকে সিএমএম আদালতে হাজির করে। শুনানিকালে রাষ্ট্রপক্ষ দাবি করে, মামলার তদন্ত প্রক্রিয়া এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে এবং তার প্রভাবশালী পরিচয়ের কারণে জামিনে মুক্তি পেলে তদন্ত প্রভাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
অন্যদিকে, নুসরাত ফারিয়ার আইনজীবীরা জামিন চেয়ে আদালতের কাছে আবেদন করেন এবং দাবি করেন যে, এই মামলা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও ভিত্তিহীন।
জনমনে প্রতিক্রিয়া:
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তার গ্রেপ্তারের খবরে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। অনেকে বিচারিক প্রক্রিয়াকে সম্মান জানিয়ে অপেক্ষা করতে বলছেন, আবার অনেকে অভিনেত্রীর সম্পৃক্ততা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
এই মামলা এখনো বিচারাধীন, এবং আদালতের চূড়ান্ত রায়ের আগ পর্যন্ত কারও বিরুদ্ধে দায় প্রমাণিত হয়েছে—এমনটি বলা যাবে না। রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের যুক্তি-তর্ক ও প্রমাণাদি যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে আদালত সিদ্ধান্ত নেবেন—নুসরাত ফারিয়া জামিনে মুক্ত হবেন কিনা, নাকি তাকে আদালতের আদেশে কারাগারে পাঠানো হবে।